এক সময় ফুটবলার হিসেবে পরিচিত ছিলেন টেরি ক্রিউজ। তবে তার পরিচয়টা এখন পাল্টে হয়েছে অভিনেতা। টিভি ও সিনেমার পরিচিত মুখ হয়ে উঠছেন টেরি। পর্নোগ্রাফি তার জীবনে কী রকম ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে, সেসব কথা বেশ কয়েকদিন ধরেই ভিডিও আকারে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। ধারাবাহিকভাবে পোস্ট করা ভিডিও সিরিজটির নাম তিনি দিয়েছেন ‘ডার্টি লিটল সিক্রেটস’।
এসব ভিডিওতে নিজের অতিরিক্ত পর্নো আসক্তি নিয়ে সরাসরি কথা বলার পাশাপাশি এ আসক্তির জন্য জীবনে যেসব চরম মূল্য তাকে দিতে হয়েছে, তাও খোলাখুলিভাবে বলেছেন। সেই ১২ বছর বয়স থেকে পর্নো আসক্তি ছিল টেরির। তার ভিডিওগুলো ইন্টারনেটে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সবাই তার এমন সাহসী উদ্যেগেরও প্রসংশা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পর্নোগ্রাফি নানাভাবে আমার জীবনকে ধ্বংস করেছে। দিন গড়িয়ে রাত হওয়ার পরও যদি আপনি পর্নোগ্রাফি দেখতে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার বড় ধরনের সমস্যা আছে। আমারও একই সমস্যা ছিল।’
এ আসক্তির কারণে তার সংসার প্রায় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। স্ত্রীর কাছ থেকে সাময়িকভাবে আলাদাও থাকতে হয়েছিল তাকে।
টেরির উদ্যোগে সামিল হয়ে অনেকেই তাদের পর্নো আসক্তির কথা জানাচ্ছেন ফেসবুকে।
পর্নো আসক্তি আসলে একটি বিতর্কিত টার্ম। ডায়াগনস্টিক এন্ড স্ট্যাটিসটিক্যাল ম্যানুয়েল ‘পর্নো আসক্তিকে’ মানুষের অস্বাভাবিকতার তালিকায় স্থান দেয়নি। অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, যারা পর্নো দেখেন তাদের মস্তিষ্ক মোটেও মাদক গ্রহণকারীদের মতো বিকৃত নয়। যদিও এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অনেক মন্তব্য আছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের একদল গবেষক পর্নো আসক্ত ১৯ তরুণের উপর গবেষণা করে দেখেছেন, মাদকাসক্তদের সাথে পর্নো আসক্তদের এক জায়গায় মিল আছে। মাদক গ্রহণকারী তার পছন্দের মাদক দেখলে মস্তিষ্কের যে স্থানটি উদ্দীপ্ত হয়, পর্নো আসক্ত ব্যক্তির উদ্দীপীত হওয়ার স্থানটিও একই।
আবার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক নিকোল প্রজ পর্নো আসক্ত আর মাদকাসক্তদের একই কাতারে ফেলতে নারাজ।
বিবিসি ট্রেন্ডিং রেডিওকে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য আসক্তদের সাথে পর্নো আসক্তদের ব্রেনের মিল আছে বটে, তবে সেটা অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত। আপনি দেখবেন, যারা জুয়া খেলে তাদের ব্রেন পর্নো আসক্তদের ব্রেনের তুলনায় বেশি সক্রিয়।’