‘ফুলির কথাই আমার কথা।’ ‘আজ রবিবার’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনেতা ফারুক আহমেদের এ সংলাপটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। নাটকের ফুলি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নাসরিন নাহার। অভিনয়ে ভালো করার সম্ভাবনা ছিল তাঁর। কিন্তু এগোননি। নানা কারণে বিনোদন অঙ্গন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নাসরিন।
‘আজ রবিবার’ ধারাবাহিক নাটক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। নাটকটি প্রচারের পর যেখানেই গেছেন, চারপাশের মানুষ দূর থেকে তাঁকে ফুলি সম্বোধন করত। বেশির ভাগ সময় শুনতে হতো, ‘ওই যে ফুলি মতি যায়।’ সেকালে সেলফি তোলার সুযোগ ছিল না। তাই অটোগ্রাফ দিতে হতো নাসরিনকে। ওই এক নাটকের কল্যাণে ২৫ বছর পরও মানুষ মনে রেখেছে তাঁকে। প্রথম দর্শনে মনে করতে না পারলেও অনেকেই বলেন, ‘কোথাও যেন দেখেছি।’

নাসরিনের স্বামী অভিনেতা ফারুক আহমেদ। ১৯৯৩ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। ঢাকা থিয়েটারে ‘সংলাপ’ নাটকের মহড়ার সময় দুজনের পরিচয়। প্রথম দেখায় ফারুক আহমেদ তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। শুরুতে তাঁদের বিয়েতে সবাই রাজি থাকলেও নাসরিন নিজেই রাজি ছিলেন না। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘নিজেদের দলের ছেলেকে বিয়ে করলে সবাই কী বলবে! তা ছাড়া আমার বড় বোনেরও তখন বিয়ে হয়নি। সেসব কারণেই বিয়েতে রাজি হইনি। পরে থিয়েটারের জামান ভাই, দুলাল ভাই, কামাল ভাইসহ সবাই মিলে আমাকে বোঝালেন, ফারুক তো অন্য কাউকে বিয়ে করবে।’ সে সময় নাসরিন ভেবেছিলেন, এই অভিনেতাকে বিয়ে করলে অন্তত নাটকটা ঠিকঠাক করা যাবে। তা ছাড়া ছেলে হিসেবে ফারুক আহমেদও চমৎকার।
পরে নিজে অভিনয় না করলেও ফারুক আহমেদকে অভিনয় চালিয়ে নিতে শতভাগ সহযোগিতা করেছেন নাসরিন। স্বামীর অভিনয় নিয়ে আলোচনা–সমালোচনাও চলে নিজেদের মধ্যে। অভিনয়ে ব্যস্ত থাকায় ফারুক আহমেদ পরিবারে সময় দিতে পারেন না। এ নিয়ে নাসরিন নাহারের কোনো অভিযোগ নেই। অভিনয় নিয়ে কেউ কাউকে কখনই বাধা দেননি।

নাসরিন নাহারের বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকার ওয়ারীতে, থাকেন নিউ ইস্কাটনে। পরিবার সামলানো, বই পড়া, সিনেমা দেখাই এখন তাঁর প্রধান কাজ। একমাত্র মেয়ে ফাইরুজ নাওয়ার ঐশী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। তিনি অভিনয় করতে আগ্রহী নন। বরং ছবি আঁকতেই বেশি ভালোবাসেন।
